আল-আকসা রক্ষায় ইসরাইলে রকেট হামলা চালায় হামাস
১৬ জুন, জেরুসালেম পোস্ট, বিবিসি: জেরুসালেম ও মসজিদুল আকসা রক্ষার জন্য ইসরাইলের অভ্যন্তরে হামাস রকেট হামলা চালিয়েছে বলে মনে করেন বহু ফিলিস্তিনী। গত মঙ্গলবার প্রকাশিত জনমত জরিপে এমন তথ্য মিলেছে।
গাজায় সাম্প্রতিক যুদ্ধের পর থেকে হামাসের জনপ্রিয়তা বেড়ে গেছে। অন্যদিকে কমেছে ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের নেতৃত্বাধীন ফাতাহর জনপ্রিয়তা। রামাল্লাভিত্তিক প্যালেস্টিনিয়ান সেন্টার ফর পলিসি অ্যান্ড সার্ভে রিসার্চ এ জরিপ চালায়। ৯ জুন থেকে ১২ জুনের মধ্যে এ জরিপ চালানো হয়। এতে অংশ নেন প্রায় ১২০০ ফিলিস্তিনী।
জরিপে অংশ নেয়া ৭২ শতাংশ ফিলিস্তিনী মনে করেন, হামাস ইসরাইলে রকেট হামলা চালিয়েছে জেরুসালেম এবং আল-আকসা মসজিদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে। ৯ শতাংশ মনে করেন, ফিলিস্তিনের সাধারণ নির্বাচন বাতিল হওয়ার কারণে এ সংঘাত হয়।
খবরে বলা হয়, অধিকাংশ ফিলিস্তিনী বিশ্বাস করতে শুরু করেছেন যে, হামাস ফিলিস্তিনীদের প্রতিনিধিত্ব করা এবং নেতৃত্ব দেয়ার ক্ষেত্রে বেশি যোগ্য। অন্যদিকে সামান্য অংশ বিশ্বাস করেন, ফিলিস্তিনীদের নেতৃত্ব দেয়ার যোগ্য হচ্ছে ফাতাহ।
এতে অংশ নেওয়া ৭৭ শতাংশ ফিলিস্তিনী মনে করেন, সর্বশেষ যুদ্ধে হামাস ইসরাইলের সঙ্গে জিতেছে। আর ৬৫ শতাংশ ফিলিস্তিনী মনে করেন, এ যুদ্ধে হামাস তাদের লক্ষ্য পূরণ করতে পেরেছে। লক্ষ্যগুলোর অন্যতম শেখ জারাহ থেকে ফিলিস্তিনীদের বাস্তুচ্যুতি ঠেকিয়ে দেয়া এবং ইসরাইলের অভ্যন্তরে সফলভাবে রকেট হামলা। একই সঙ্গে আল-আকসা মসজিদে ফিলিস্তিনীদের প্রবেশে ইসরাইলী ‘নিষেধাজ্ঞা’-এর অবসান ঘটিয়েছে হামাস।
জরিপের তথ্যানুযায়ী, এখন যদি ফিলিস্তিনে নির্বাচন হয়, তবে হামাস নেতা ইসমাইল হানিয়া ৫৯ শতাংশ ভোট পাবেন। বিপরীতে আব্বাস পাবেন ২৭ শতাংশ।
সাম্প্রতিক গাজা যুদ্ধে ইসরাইলী হামলায় বহু ফিলিস্তিনীর মৃত্যু হয়। ইসরাইলের ক্ষতিও কম হয়নি। বিশ্বজুড়ে ইসরাইলবিরোধী বিক্ষোভ-নিন্দার ঝড়কে সবচেয়ে বড় ক্ষতি হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকরা।
গাজায় আবারও ইসরাইলী বিমান হামলা
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় হামাসের অবস্থান লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরাইল। গতকাল বুধবার ভোরে গাজা শহরে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। ইসরাইলের দাবি, গাজা থেকে আগুন বেলুন উৎক্ষেপণের পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে বিমান হামলা চালানো হচ্ছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম এ খবর জানিয়েছে।
টানা ১১ দিনের আন্তসীমান্ত সংঘাতের পর ২১ মে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় হামাস ও ইসরাইল। বিমান হামলায় গাজা উপত্যকাকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে ইসরাইলী বাহিনী। বোমা হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন নারী-শিশুসহ শতাধিক ফিলিস্তিনী।
ইসরাইলী হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে হামাসের এক মুখপাত্র জানান, জেরুসালেমে পবিত্র মসজিদ রক্ষায় সাহসী ও প্রতিরোধ অব্যাহত রাখবে হামাস।
এক বিবৃতিতে ইসরাইলের প্রতিরক্ষা বাহিনী আইডিএফ জানায়, খান ইউনুস ও গাজা শহরে হামাসের পরিচালিত সামরিক স্থাপনায় তাদের যুদ্ধবিমান আঘাত করেছে।
ইসরাইলীর বাহিনীর দাবি, ওইসব স্থাপনা থেকে সন্ত্রাসী কর্মকা- পরিচালনা করা হচ্ছিল। গাজা উপত্যকা থেকে সন্ত্রাসী পদক্ষেপ অব্যাহত থাকলে আইডিএফ পুনরায় লড়াই শুরুসহ যেকোনো পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত রয়েছে।